বাঁকুড়া২৪X৭প্রতিবেদন : পঞ্চায়েত নির্বাচনে এবার বাঁকুড়া জুড়ে সবুজ ঝড়ে বিরোধীরা কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। বাঁকুড়া জিলা পরিষদের ৫৬ আসনের মধ্যে ৫৫ টি গেছে তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতে। জেলার ওন্দার ৩৮ নাম্বার জিলা পরিষদে আসনটিতে একমাত্র বিরোধী দল হিসেবে জিতেছে বিজেপি। বিজেপি প্রার্থী রুম্পা ধীবর এই আসনে বিজয়ী হয়েছেন। এদিকে,এবার বাঁকুড়া জিলা পরিষদের সভাধিপতির আসনটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। তাই এই সভাধিপতির দৌড়ে কারা,কারা আছেন। তা নিয়ে তৃণমূল কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে নানা জল্পনা চলছে জেলা জুড়ে।
তার ভিত্তিতে জেলার চার জিলা পরিষদ আসনে বিজয়ী মহিলা তৃণমূল প্রার্থীদের নিয়ে এখন জেলার রাজনৈতিক মহলেও চর্চা শুরু হয়ে গেছে। আসুন এই চারজন কারা,কারা সেদিকে নজর রাখা যাক।বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের তালডাংরার ২৮ নাম্বার জিলা পরিষদ আসনে এবার বিরোধী প্রার্থীর থেকে প্রায় ১৩,৬৭৯ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন অনুসূয়া রায়। তিনি তালডাংরা তৃণমূল ব্লক সভাপতি তারাশঙ্কর রায়ের স্ত্রী। এই রায় দম্পতি একদা সিপিএমের লাল দূর্গ বলে পরিচিত এবং সিপিএম নেতা অমিয় পাত্রের খাস এলাকা হিসেবে পরিচিত তালডাংরায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক ভিত্তি অনেকখানি মজবুত করেছেন।
পাশাপাশি,এই ব্লকে এবার পঞ্চায়েতেও ভালো ফল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই জিলা পরিষদের সভাধিপতির দৌড়ে অনুসূয়া রায় রয়েছেন এমনটা মনে করছেন এলাকার তৃণমূল কর্মী,সমর্থকেরা। তারাচাইছেন, তালডাংরা থেকে এবার সভাধিপতি হয়ে অনুসূয়া দেবী যেন, সারা জেলার গ্রাম উন্নয়নে সামিল হওয়ার সুযোগ পান।অন্যদিকে, আরও এক ডাকাবুকো তৃণমূল নেত্রীর নাম উঠে আসছে সভাধিপতি হিসেবে। তিনি হলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁনের প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মন্ডল। তিনি এবার জয়পুরের ৪৪ নাম্বার জিলা পরিষদ আসনে প্রায় ১৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। সুজাতা দেবীর রাজ্য নেতৃত্বের সাথে ভালো যোগাযোগ রয়েছে।
তা ছাড়া সোস্যাল মিডিয়া ও মেনস্ট্রীম মিডিয়ায় তার জনপ্রিয়তা প্লাস পয়েন্ট বলে মনে করা হচ্ছে।পাশাপাশি দৌড়ে আছেন ,জেলার মহিলা মহলের জনপ্রিয় নেত্রী, তৃণমূল কংগ্রেসের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার মহিলা সভানেত্রী বিশ্বরূপা (মৌ) সেনগুপ্তও।ছাতনার ৯ নাম্বার জিলা পরিষদ আসনে প্রায় ৫৮৯৯ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। এই নেত্রীর নামও সভাধিপতি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বলে দলের অনেকে মনে করছেন।এদিকে,সভাধিপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে সব থেকে পাল্লা ভারী অর্চিতা বিদের। এই সুদর্শনা মহিলা নেত্রীর সাংগঠনিক দক্ষতা যেমন আছে।
পাশাপাশি,বিষ্ণুপুর পুরসভায় পৌর প্রশাসক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা এই দৌড়ে খানিক এগিয়ে রেখেছে তাকে। অর্চিতা দেবী ২০১৩ তে গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রার্থী হিসেবে প্রথম ভোটে লড়াই করেন। এবং জয়ী হয়ে প্রধান নির্বাচিত হন। ২০১৮ তে তিনি পঞ্চায়েত সমিতিতে জয়ী হন। তারপর সেই পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ২০১৯ এ বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রশাসক হিসেবে কাজ করেন। এছাড়া অর্চিতা বিদের স্বামী সুখেন বিদ বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলে প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা। এবং জিলা পরিষদের কর্মাধক্ষ্য হিসেবে সাফল্যের সাথে কাজ করেছেন। বিদ দম্পতি এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন গড়ে তুলতে পরিশ্রমও করেছেন প্রচুর।
তাই, এবার জিলা সভাধিপতির দৌড়ে অন্যদের থেকে অর্চিতা দেবী কয়েক কদম এগিয়ে আছেন বলে দলের অন্দরেও চর্চা তুঙ্গে।তবে,এসবই জল্পনা। এই চার কন্যের মধ্যেই একজনকে সভাধিপতি নির্বাচিত করা হয়? না অন্য কোন নতুন মুখ যারা আলোচনার আড়ালে আছেন তেমন কেও এই পদে আসীন হন? তা স্পষ্ট ভাবে বলা সম্ভব নয়। ফলে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্বের ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। সর্বোপরি কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের ওপর নির্ভর করছে পুরো প্রক্রিয়া।আগামী ২০ জুলাই রয়েছে শুনানি। কারন হাইকোর্টের রায়ের ওপর নির্ভর করছে প্রার্থীদের জয় - পরাজয়। যা রায় প্রকাশের পর চুড়ান্ত হবে।
👁️🗨️দেখুন 🎦ভিডিও। 👇