কাটমানি ইস্যুতে অভিযুক্ত তৃণমূল নেত্রীর দিলীপ ঘোষের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ,গ্রামে বিক্ষোভে সামিল বিজেপিরই কর্মী সমর্থকরা।
বাঁকুড়া২৪X৭প্রতিবেদন : জেলার ওন্দা ব্লক জুড়ে ডাকাবুকো তৃণমূল নেত্রী নামে পরিচিত বাণী হাজরা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাত ধরে কলকাতায় বিজেপির সদর দপ্তরে তৃণমূল ছেড়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই বাণীদেবীর গ্রাম চন্দ্রকোনায় বিজেপি কর্মী, সমর্থকরা বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন। তাদের দাবী,এই বাণী হাজরাই গত পঞ্চায়েতে বিজেপির কর্মী,সমর্থকদের ওপর হামলায় মদত দিয়েছিলেন। তাছাড়া দূর্ণীতি ও কাটনানি নেওয়ার ঘটনায় এই নেত্রীর ঘর ঘেরাও করে সাধারণ মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিল। লোকসভা ভোটের পর জন রোষ থেকে বাঁচতে তিনি গ্রাম ছেড়ে পালিয়েও ছিলেন। এমন এক তৃণমূল নেত্রীর হাতে বিজেপির পতাকা তুলে দেওয়ায় নিচু তলার বিজেপি কর্মীরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। তারা আজ বানী হাজরাকে বিজেপি থেকে বহিষ্কারের দাবীতে বিক্ষোভও দেখান। বিজেপির স্থানীয় বুথ সভাপতি যাদব চক্রবর্তী বলেন এই অত্যচারী ও দূর্ণীতিবাজ মহিলাকে বিজেপি থেকে না তাড়ালে আখেরা বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের ওপর আস্থা হারাবে দলের কর্মী, সমর্থকরা।
বিজেপির জেলা নেতৃত্বের একাংশের দাবী জেলায় বাণী হাজরা বিজেপিতে যোগ দিলে তাকে প্রবল বিক্ষোভে পড়তে হত এটা বুঝতে পেরেই তিনি কলকাতা গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন। কিন্তু তিনি স্থানীয় স্তরে কোন সম্মান পাবেন না। এবং কেও বিজেপি নেত্রী হিসেবে মানবেনও না। রাজ্য নেতৃত্ব এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মানুষের আস্থার ওপর আঘাত হানছে বলেও এক অংশের মত। এদিকে, তৃনমূলের এই নেত্রীর বিজেপিতে যোগদান প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা ভবানী মোদক বলেন, বাণী হাজরাকে দল বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তা টের পেয়েই বহিষ্কারের আগে নিজের গা বাঁচাতে বিজেপিতে যোগ দিলেন। তার ওপর তৃণমূলও যে বীতশ্রদ্ধ তাও সাফ জানিয়েদেন ভবানী বাবু।
বাঁকুড়া জিলা পরিষদের সদস্যা এবং ওন্দার প্রাক্তন যুব তৃণমূল ব্লক সভাপতি বাণী হাজরার বিতর্ক ছিল নিত্য সঙ্গী। আর তাকে ঘিরে বহুবার জনতার বিক্ষোভের জেরে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকেও যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। সেই নেত্রী অবশ্য সে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সাফ জানিয়েছেন, মোদীজীর উন্নয়ন এবং ৫০০ বছরের সমস্যা মিটিয়ে রাম মন্দিরের ভুমি পুজোর মতো ঐতিহাসিক ঘটনায় অনুপ্রাণিত হয়েই তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আর তার বিরুদ্ধে বিজেপির স্থানীয় কর্মী,সমর্থকরা পঞ্চায়েতে যে সন্ত্রসের অভিযোগ তুলেছেন তার দায় তৃণমূলের ওপর বর্তায়। বাণী হাজরা কোনো সন্ত্রাস করেন নি।
লকডাউনের মধ্যে রাজ্য জুড়ে দল বদলের হিড়িক পড়ে গেছে। তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যে দল ভাঙ্গানোর প্রতিযোগিতা চলছে। কিন্তু, সাধারণ মানুষ বা নিচু তলার কর্মীরা এই দল বদলকে সমর্থন করছেন না। কারণ তাদের উপলব্ধি, এই নেতারা দলের স্বার্থে নয় ব্যক্তি স্বার্থে জার্সি বদল করছেন। তাই বানী দেবীর মতো দল বদলের ঘটনায় বিক্ষোভ চলছে তার নিজের গ্রামেই। এই বিক্ষোভের আঁচ বিজেপির রাজ্য স্তর পর্যন্ত পোঁছয় কিনা সেদিকেই নজর রয়েছে জেলার শাসক ও বিরোধী দুই রাজনৈতিক শিবিরেই।
দেখুন 🎦 ভিডিও। 👇