বাঁকুড়ায় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা মূল্যের হাতির দাঁত পুড়িয়ে ধ্বংস করল বনদপ্তর।
বনদপ্তরের হেফাজতে থাকা এই ৫৭ টি হাতির দাঁত এদিন পুড়িয়ে ফেলা হয়। এই ৫৭ টি দাঁতের মধ্যে সর্ব্বোচ্চ একটি দাঁতের ওজন ছিল ২৮ কেজি,৬ টি দাঁত ছিল প্রায় ২০ কেজির মতো । এছাড়া বাকি দাঁত গুলির ওজন ছিল ১ থেকে ৫ কেজির মধ্যে এবং দাঁত গুলি লম্বায় ছিল ৬ সেন্টিমিটার থেকে এক মিটার পর্যন্ত৷
বাঁকুড়া২৪x৭প্রতিবেদন : দু- এক বছর নয়, টানা দশ বছর ধরে নিজেদের হেপাজতে জমিয়ে রাখা ৫৭ টি হাতির দাঁত পুড়িয়ে ধ্বংস করল বনদপ্তর।যার আন্তর্জাতিক বাজারে দাম ভারতীয় মুদ্রায় তিনশো কোটি টাকারও বেশী। ওয়াকিবহাল মহলের খবর,এখন আন্তর্জাতিক বাজারে হাতির দাঁতের কেজি প্রতি দাম দেড় কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।বিশ্ব জুড়ে হাতির দাঁতের কারবার নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক চোরা বাজারে দিন,দিন বাড়তে চলেছে হাতির দাঁতের দাম। মঙ্গলবার দুপুরে কড়া নিরাপত্তায় বড়জোড়ার দেজুড়িতে একটি কারখানার চুল্লিতে অতি উচ্চ তাপমাত্রায় এই দাঁত গুলি পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হয়।
উল্লেখ, ভারত সরকার বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন,১৯৭২ -এ সংশোধনী এনে দেশজুড়ে সম্পূর্ণ ভাবে হাতির দাঁতের কারবার নিষিদ্ধ করে দেয়।এরপর ১৯৮৯ সাল থেকে বিশ্বজুড়েই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় হাতির দাঁত অর্থাৎ, ‘ivory’ বিক্রি৷ তারপর থেকে চোরা পথে হাতির দাঁতের কালোবাজারি এখনও চলছে বিশ্ব জুড়ে৷ তা ঠেকাতে যদিও সব দেশ তৎপর। ভারতে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী রাজ্য বনদপ্তর বাঁকুড়ার বনদপ্তরের হেফাজতে থাকা এই ৫৭ টি হাতির দাঁত এদিন পুড়িয়ে ফেলে৷ এই ৫৭ টি দাঁতের মধ্যে সর্ব্বোচ্চ একটি দাঁতের ওজন ছিল ২৮ কেজি,৬ টি দাঁত ছিল প্রায় ২০ কেজির মতো।
এছাড়া বাকি দাঁত গুলির ওজন ছিল ১ থেকে ৫ কেজির মধ্যে এবং দাঁত গুলি লম্বায় ছিল ৬ সেন্টিমিটার থেকে এক মিটার পর্যন্ত৷ এই সব দাঁতের আনুমানিক বাজার দর কষলে তা প্রায় ৩০০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রায় ঘন্টা দুইয়ের চেষ্টায় এই সবকটি হাঁতির দাঁত পুড়িয়ে ছাই করে ফেলে বনদপ্তর। এদিনের এই আইভরি ডেস্ট্রয় আপারেশনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্য বনপাল (কেন্দ্রীয় চক্র) এস,কুলানডাইভেল, বাঁকুড়া জেলার পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারী, বাঁকুড়া উত্তর বিভাগের ডিএফও উমর ইমাম,পাঞ্চেৎ বন বিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ,বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায়,
সাম্মানিক বন্যপ্রাণ সংরক্ষক মথুর কাপড়ি, জিলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ চিত্ত মাহাত সহ বন দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিকরা। এদিন প্রায় ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এই হাতির দাঁত পুড়িয়ে ফেলা হয়৷ মুখ্য বনপাল ( কেন্দ্রীয় চক্র) এস কুলান ডাইভেল বলেন, দেশের বন্য প্রাণ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী হাতির দাঁতের ব্যবহার এবং কেনা,বেচা নিষিদ্ধ ও আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।এবং বনদপ্তর কোন ভাবেই এই দাঁত ব্যবহার বা বিক্রিকে সমর্থন করে না।তাই,আজ বাঁকুড়ায় টানা দশ বছর ধরে জমে থাকা ৫৭ টি হাতির দাঁত পুড়িয়ে ধ্বংস করা হল।
প্রসঙ্গত,গত দশ বছরে বাঁকুড়া জেলায় দলমা থেকে হাতির আনাগোনা বেড়েছে। আবার দলছুট হয়ে এই জেলায় আবাসিক হয়ে থেকেও গেছে অনেক হাতি। এরই মধ্যে বার্ধক্য জনিত কারণ, রোগাক্রান্ত হয়ে বা দুর্ঘটনা কিংবা বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে হাতি মারা পড়ে জেলায়। মারা যাওয়া হাতির দেহ পোড়ানো হলেও নিয়ম অনুযায়ী হাতির দাঁত কেটে তা বনদপ্তর নিজেদের হেফাজতে রাখত। তা টানা দশ বছর ধরে জমতে,জমতে ৫৭ তে পৌছে যায়। সেই জমে থাকা সবকটি দাঁত এদিন পুড়িয়ে ধ্বংস করল বনদপ্তর।
👁️🗨️দেখুন🎦ভিডিও। 👇