ডাক্তারির শংসাপত্র নেওয়ার পর সমাবর্তনের রাতেই হোস্টেলের ছাদ থেকে পড়ে রহস্যজনক মৃত্যু লেডি ডাক্তারের ,বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজে চাঞ্চল্য!
লেডিস হোস্টেলের দোতলায় থাকত অঙ্কিতা। ভোর তিনটে নাগাদ হোস্টেলের পাঁচতলা থেকে পড়ে যায় অঙ্কিতা। তার আর্ত চিৎকারে হোস্টেলের জুনিয়ারদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। তারা রুম থেকে বেরিয়ে দেখে নিচে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে অঙ্কিতা।
বাঁকুড়া২৪X৭প্রতিবেদন : এই দিনটা ছিল জীবনের সব থেকে খুশীর দিন। এদিনই জীবনের স্বপ্ন বাস্তব রূপ পেল।হাতে এল ডাক্তার হিসেবে শংসাপত্র। বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজের লেডি ডাক্তার অঙ্কিতা মণ্ডল (২৪) তার বাকী সহপাঠিদের সাথে সমাবর্তনে যোগ দেন বুধবার মেডিকেল কলেজের নুতন ভবনের অডিটোরিয়ামে। দুপুরে তার হাতে ডাক্তারীর শংসা পত্রও তুলে দেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান।
এর পর রাত্রিতে কলেজের কনভোকেশনেও অংশ নেয় অঙ্কিতা। রাত পর্যন্ত চলে এই অনুষ্ঠান। সেখানে অঙ্কিতার মা, বাবাও উপস্থিত ছিলেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে আরও রাত্রি পর্যন্ত। সেখান থেকে বেরিয়ে বাবা, মার সাথে ডিনারও করে অঙ্কিতা। তার পর হোস্টেলে ফিরে যায় সে।লেডিস হোস্টেলের দোতলায় থাকত অঙ্কিতা। ভোর তিনটে নাগাদ হোস্টেলের পাঁচতলা থেকে পড়ে যায় অঙ্কিতা।
তার আর্ত চিৎকারে হোস্টেলের জুনিয়ারদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। তারা রুম থেকে বেরিয়ে দেখে নিচে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে অঙ্কিতা। তড়িঘড়ি তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।বৃহস্পতিবার ভোর ৫ টা নাগাদ তার মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে মেডিকেল কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে। মেয়ের এমন মর্মান্তিক মৃত্যতে ভেঙ্গে পড়েন তার বাবা, মাও।
মেয়ে ডাক্তার হল, আর তার ২৪ ঘন্টার মধ্যে সবাইকে ছেড়ে চলে যাবে তা কেওই ভেবে উঠতে পারছেন না। আঙ্কিতার সহপাঠি সুত্রে জানা যাচ্ছে,আপাত দৃষ্টিতে হাসিখুশি ও মিশুকে মনে হলেও সে খানিকটা আত্মকেন্দ্রিক ছিল।তার একান্ত ঘনিষ্ট বান্ধবীও কেও ছিল না।
আর কেন নিজের দোতলার ঘর ছেড়ে গভীর রাতে সে হোস্টেলের ৫ তলায় উঠেছিল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছ? আর তার সাথে আর কেও ছিল কিনা,বা তাকে কেও ঠেলে দিয়েছে, না নিজেই পড়ে গেছে, না নিজেই ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তাও স্পষ্ট নয়। পুলিশও তদন্তে নেমে তা খতিয়ে দেখছে। চলছে সহপাঠিদের কাছ থেকে তথ্য জোগাড়ের কাজও।
এদিনই বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে অঙ্কিতার ময়না তদন্তও করা হয়।পুলিশ জানিয়েছে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যু কারণ নিয়ে দ্বন্দ কাটবে। অঙ্কিতার বাড়ী হাওড়া জেলার সাঁতরাগাছি এলাকায়।এদিকে আঙ্কিতার মৃত্যু নিয়ে এখনও রহস্য কিন্তু থেকেই গেল। সেই সাথে প্রশ্ন উঠছে এই মৃত্যু কি নিছক দুর্ঘটনা না পরিকল্পিত খুন? তা নিয়েও। এখন দেখার পুলিশের তদন্তে অঙ্কিতার মৃত্যু রহস্য প্রকাশ্যে আসে কিনা? সেদিকেই নজর রইল সবার।