গ্রাম্য কায়দায় ভোট মেশিনারি তৈরি করে বাজিমাৎ দিব্যেন্দুর,বাঁকুড়া শহরে গায়েব গেরুয়া ঝড়,নিশ্চিহ্ন বামেরা।
গ্রামের স্কুল পরিচালন সমিতি বা গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোটে এতদিন যে ভাবে ভোট করেছেন সেই আদলেই শহরে ভোটের লড়াইয়ে নামার জন্য নিজের বাহিনী তৈরি করে ফেলেন তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটের সেনাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্র। গ্রামের ভোটে যে ভাবে ঘরে,ঘরে প্রচার,এবং ম্যান টু ম্যান প্রচার বেশী প্রাধান্য পায় একই ভাবে পুরভোটেও দলীয় প্রার্থীদের প্রচারের নির্দেশ দিয়েই মিলল বড়ো সাফল্য।
বাঁকুড়া২৪X৭প্রতিবেদন : সকালে ছিল খানিক উৎকণ্ঠা। বেলা বাড়ার সাথে,সাথে তা ফিকে হতে থাকে। একে,একে বাড়তে থাকে ভিক্ট্রি ল্যাপের পরিধি। দুই নাম্বার ওয়ার্ডে হেভী ওয়েট জাতীয় কংগ্রেস প্রার্থী রাধারাণী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয়ের খবর এসে পৌঁছয় তার কাছে। তৃণমূল যুব নেতা রাজীব দে এই প্রথম তৃণমূলের হয়ে এই ওয়ার্ডে খাতা খোলেন। এর পর একে,একে ওয়ার্ড দখলের খবর আসতে থাকে তৃণমূল ভবনে।দেখতে,দেখতে তা ২১ পৌঁছে যায়। সাথে,সাথে বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের গননা কেন্দ্রে পৌঁছে যান তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলার সাংগঠনিক সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্র। তাকে কাঁধে তুলে চলে কর্মী,সমর্থকদের বিজয় উল্লাস।
গ্রাম্য রাজনীতি থেকে উঠে আসা তৃণমূল কংগ্রেসের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্রের কাছে বড়ো চ্যালেঞ্জ ছিল এই পুর ভোট। গ্রাম থেকে শহরের রাজনীতিতে পা রাখা দিব্যেন্দু বাবু শহরের ভোটে কতটা সাফল্য পাবেন তা নিয়ে দলের মধ্যেও গুঞ্জন ছিল। এর ওপর ছিল দলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কাঁটা। এসব তোয়াক্কা না করে পুরভোটের জন্য তিনি ভোট মেসিনারির গুটি সাজিয়েছিলেন নিজের মতো করে। একেবারে গ্রামের স্কুল পরিচালন সমিতি বা গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোটে এতদিন যে ভাবে ভোট করেছেন সেই আদলেই শহরে ভোটের লড়াইয়ে নামার জন্য নিজের বাহিনী তৈরি করে ফেলেন দিব্যেন্দু বাবু। এমনকি গ্রাম থেকে ভোট মাস্টার নামে পরিচিতি আছে এমন নেতাদের অভিজ্ঞতা শহরের ভোটে প্রোয়োগে জোরও দেন।
গ্রামের ভোটে যে ভাবে ঘরে,ঘরে প্রচার,এবং ম্যান টু ম্যান প্রচার বেশী প্রাধান্য পায় একই ভাবে পুরভোটেও দলীয় প্রার্থীদের প্রচারের নির্দেশ দেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই ভোটের সেনাপতি। আর তাতেই বাজীমাৎ। এর ওপর লক্ষী ভাণ্ডার এবং মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়ন বাড়ী,বাড়ী তুলে ধরার ফলে শহরের মহিলাদের ভোটের সিংহভাগ তৃণমূলের ঝুলিতে পড়ে৷
Oযার ফলে ২৪ ওয়ার্ডের বাঁকুড়া পুরসভার ২১ টি আসনে জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা। কিছু,কিছু ওয়ার্ডে লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হলেও গত বিধানসভার ফলের ছায়াই মাড়াতে পারেনি বিজেপি। শহরে বিজেপি ঝড় একেবারে গায়েব। এমনকি বিধায়ক নিলাদ্রি দানা ও সাংসদ সুভাষ সরকারের নিজের ওয়ার্ডেই ১৬ নাম্বারে বিজেপি হেরেছে৷
অন্যদিকে, বামেরা এবার পুরভোটে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে৷ তবে,দিব্যেন্দু বাবুর ২০-০ ফলাফলের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে তিন নির্দল প্রার্থী। তার মধ্যে তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত দুই প্রার্থী দিলীপ আগরওয়াল ও অন্যনা রায় চক্রবর্তী রয়েছেন। আর এক নির্দল দেবাশীষ লাহা। ফলে বাঁকুড়া শহরে বিরোধী রাজনৈতিক দলের কোন প্রতিনিধি এবার রইল না। যা বাঁকুড়া পুরসভার ইতিহাসে নতুন নজীর সৃষ্টি করল।
👁️দেখুন🎦 ভিডিও। 👇