চারদিনের বাঁকুড়া জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,কবে কি কর্মসুচী রয়েছে?জেনে নিন এক নজরে।
প্রথমে ঠিক ছিল মুখ্যমন্ত্রীর বাঁকুড়া সফর হবে দুদিনের। কিন্তু তা বেড়ে হল চার দিনের। তিনি আকাশ পথে জেলায় আসছেন সোমবার দুপুরে। রয়েছে খাতড়ায় প্রশাসনিক বৈঠক ও সভা।পাশাপাশি, শুনুকপাহাড়ীতে রাজনৈতিক সভা মিলিয়ে রয়েছে ঠাসা কর্মসুচী। সব সেরে বৃহস্পতিবার তিনি কলকাতা ফিরবেন। দল ও প্রশাসনিক সূত্রে এখনও পর্যন্ত এমনটাই জানা যাচ্ছে।
বাঁকুড়া২৪X৭প্রতিবেদন : বিধানসভা ভোটকে পাখীর চোখ করে বাঁকুড়ায় এসে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক স্তরের হাল আরও মজবুত করে তা জনমুখী করে জনতার মন জয় করতে জেলায় ম্যারাথন কর্মসুচীকেই হাতিয়ার করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একেবারে টানা চার দিনের জন্য তিনি আসছেন বাঁকুড়া জেলা সফরে। প্রশাসনিক বৈঠক, সভার পাশাপাশি রাজনৈতিক সভাও রয়েছে এই চারদিনে।রয়েছে জেলায় দুইরাত্রিযাপনও।
এই টানা চারদিন তিনি জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের পাশাপাশি দলের নেতাদের কাছে যেমন জেলার যাবতীয় টাস্ক বুঝে নেবেন। তেমনি ভোটের আগে এই কটা মাসের জন্য কঠিন টাস্কও দেবেন এমনটাও মনে করা হচ্ছে। তাই জেলার প্রশাসনিক কর্তা থেকে দলের শীর্ষ নেতৃত্বরাও এনিয়ে কার্যত উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছেন! তা বলাই বাহুল্য।
এখনও পর্যন্ত প্রশাসনিক ও দলীয় এই উভয় সুত্র মিলিয়ে জানা যাচ্ছে, ২৩ নভেম্বর সোমবার দুপুরে হেলিকপ্টারে করে কলকাতা থেকে সরাসরি খাতড়ায় এসে পৌঁছবেন মুখ্যমন্ত্রী।বেলা ৩ টা নাগাদ খাতড়া গুরুসদয় মঞ্চে তিনি প্রশাসনিক বৈঠক যোগ দেবেন। বৈঠক শেষে খাতড়া থেকে যাবেন মুকুটমনিপুর। সেখানে সেচ দপ্তরের বাংলোয় রাত্রিযাপন করে পরের দিন মঙ্গলবার দুপুর ১টা নাগাদ খাতড়ার সিধু কানু স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক সভা থেকে বিভিন্ন পরিষেবা প্রদান করবেন।
তবে, ওই দিন মুখ্যমন্ত্রী আর মুকুটমনিপুরে থাকবেন না। চলে আসবেন বাঁকুড়া। এখানকার সার্কিট হাউসে রাত্রি যাপনের কথা রয়েছে। পরদিন বুধবার বাঁকুড়া ১ নাম্বার ব্লকের শুনুকপাহাড়ির হাটের মাঠে বেলা ১১ টা নাগাদ রাজনৈতিক জনসভায় যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। এবং বাঁকুড়া সার্কিটহাউসেই রাত্রিযাপন করবেন তিনি।
রাতে,সার্কিট হাউসে জেলার দলীয় নেতা ও বিধায়ক এবং জন প্রতিনিধি, পুরসভার প্রশাসক বা জিলা পরিষদের সভাধিপতি এবং দলের যুব,ছাত্র বা মহিলা নেতৃত্বদের প্রয়োজনে ডেকে পাঠিয়ে দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতিও ঝালিয়ে নিতে পারেন বলেও সুত্রের খবর। বিশেষ করে দলের গোষ্ঠী কোন্দলের বিষয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিতে পারেন তৃণমূল সুপ্রিমো এমনটাও মনে করা হচ্ছে।
সব কর্মসুচী সারার পর বৃহস্পতিবার তিনি জেলা থেকে কলকাতায় ফিরবেন। এখনও পর্যন্ত এই কর্মসুচী ঠিক রয়েছে। তবে বিশেষ কারণে কর্মসুচীতে সামান্য অদল,বদল হতেও পারে। যদিও সেই সম্ভাবনা নেই বলেই ধরা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত,গত ৫ ই নভেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাঁকুড়া এসে পোয়াবাগানে স্ট্যাচুতে মালা দিয়ে বাংলা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে উপড়ে ফেলার ডাক দেওয়ার পাশাপাশি, দিদির সরকারের মৃত্য ঘন্টা বেজে গেছে বলেও হুঙ্কার দিয়ে দাবী করেন ২০২১ বাংলায় বহুমত নিয়ে বিজেপি সরকার গড়বে। এই ঘোষণা স্থলে বীরসার মুন্ডার নামে একটি ভুল স্ট্যাচুতে অমিত শাহ মালা দিয়ে বীরসা মুন্ডাকে অপমান করেছেন এই দাবী তুলে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বিতর্কে নেমে পড়ে তৃণমূল। এবং এই বিতর্কের মধ্যেই অমিত শাহের জবাবী সভার ডাক দেওয়া হয়েছে শুনুকপাহাড়ী মাঠে। এখানে পুরোপুরি রাজনৈতিক সভার আয়োজন থাকছে। তাই এই সভা মঞ্চ থেকে অমিত শাহ সহ বিজেপির বিরুদ্ধে যে তৃণমূল সুপ্রিমো তোপ দাগবেন তা বলাই বাহুল্য। ফলে, সারা বাংলার পাশাপাশি দেশের রাজনৈতিক মহলেরও চোখ রয়েছে এই শুনুকপাহাড়ীর সভা মঞ্চের দিকে।
পাশাপাশি, সাঁওতাল সমাজ থেকে তাদের বিভিন্ন সংগঠনও মুখিয়ে আছেন এই সভায় বীরসা মুন্ডার স্ট্যাচু বিতর্ক ইস্যুতে কি স্ট্যান্ড নেন তিনি এবং কোন বড়ো ঘোষনা করেন কিনা? তা জানার জন্য।
অন্যদিকে, বিজেপিও নজর রাখছে এই সভা থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো তাদের বিরুদ্ধে কী তোপ দাগেন তা জানতে। কারণ তার প্রত্যুত্তর দিতে বিজেপিকেও তৈরি হতে হবে। এদিকে,রাজনৈতিক মহলের ধারণা বাঁকুড়া সফর থেকেই বাংলায় কার্যত বিজেপি - তৃণমূলের লড়াইয়ের দামামা বাজার শুরু। যার আনুষ্ঠানিক সুচনা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।