বিজেপির বিষ্ণুপুর জেলা সাংগঠনিক সভাপতির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ মহিলা নেত্রীর, ভাইরাল ভিডিও।
এই ঘটনায় খানিকটা হলেও চাপে পড়ে গিয়েছে বিজেপি। তারা সুজিত বাবুকে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদে রাখাবেন কিনা? তাও খতিয়ে দেখছেন। এই ভিডিও বার্তার সত্যতাও তারা যাচাই করে দেখবেন। প্রয়োজনে বিজেপির ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতে সুজিত বাবুকে পদ থেকেও সরানোর মতো সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে এমন ইঙ্গিতও মিলেছে রাজ্য বিজেপি সুত্রে।
বাঁকুড়া২৪X৭প্রতিবেদন : বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে দলেরই এক নেত্রীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় চাপে পড়ে গেলেন বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজিত আগস্তি। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন মহিলা মোর্চার সম্পাদিকা অমিতা মুখোপাধ্যায় নিজে এক ভিডিও বার্তায় তাকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ এনেছেন সুজিত আগস্তির বিরুদ্ধে। তার এই ভিডিও ভাইরাল হতেই বাঁকুড়া জেলার পাশাপাশি রাজ্য রাজনীতিতেও আলোড়ন পড়ে যায়। বিষয়টি নজরে আসে বিজেপির রাজ্য দপ্তরের শীর্ষ নেতৃত্বেরও।
বেলিয়াতোড়ের বাসিন্দা ওই বিজেপি মহিলা নেত্রী ভিডিও বার্তায় সরাসরি সুজিত বাবুর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি এবং জোর পূর্বক শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন। পাশাপাশি, সুজিত বাবু অমিতা দেবীর চারিত্রিক দোষের প্রসঙ্গ তুলে অকথ্য ভাষায় অপমান করেছেন বলেও আভিযোগ। এই ঘটনার পুরো বর্ননা দিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি সুজিত বাবুর বিরুদ্ধে শাস্তির দাবী তুলে সরব হয়েছেন অমিতা দেবী। যদিও ভিডিও বার্তায় এই অভিযোগ আনলেও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় কোন নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করেননি অমিতা দেবী বা তার পরিবার এমনটাই বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে, যার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সেই সুজিত আগস্তির দাবী,এই মহিলা নেত্রীর তোলা অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যে এবং ভিত্তিহীন। তাকে যড়যন্ত্র করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। তবে, এই চেষ্টা বিফলে যাবে। এদিকে,বিজেপির দলীয় সুত্রে খবর, এর আগেও সোস্যাল মিডিয়াতে সুজিত আগস্তির সাথে এক মহিলার আপত্তিজনক ছবি ভাইরাল হওয়ায়, দল তাকে সতর্ক করে। তারপর এই ঘটনা স্বাভাবিক ভাবেই দল ভালো চোখে দেখছে না।
মেজিয়া ও বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলের বিজেপি নেতা হিসেবে পরিচিত মুখ সুজিত আগস্তি। গত বিধানসভা নির্বাচনে বড়জোড়াতে তিনি বিজেপির প্রার্থীও ছিলেন। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছেও রাঢ় বাংলার জনপ্রিয় নেতা হিসেবেও পরিচিত তিনি। ফলে অল্প কিছুদিন আগেই দল তাকে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতির দায়িত্ব দেয়। সুজিত বাবুর অনুগামীদের দাবী, সেই ঈর্ষাতেই সুজিত বাবুর বিরুদ্ধে মহিলা নেত্রীকে দিয়ে সোস্যাল মিডিয়াতে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ভুয়ো অভিযোগ তোলা হচ্ছে। যদি ওই মহিলা সত্যি,সত্যিই যৌন হয়রানির স্বীকার হয়েছিলেন তাহলে, সাথে,সাথে তিনি অভিযোগ তোলেন নি কেন? তখনতিনি কেন থানায় বা দলের শীর্ষ নেতৃত্বদের কাছে অভিযোগ জানাননি? এই প্রশ্নও তুলছেন তারা।
এদিকে,এই ঘটনায় খানিকটা হলেও চাপে পড়ে গিয়েছে বিজেপি। তারা সুজিত বাবুকে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদে রাখাবেন কিনা? তাও খতিয়ে দেখছেন। এই ভিডিও বার্তার সত্যতাও তারা যাচাই করে দেখবেন। প্রয়োজনে বিজেপির ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতে সুজিত বাবুকে পদ থেকেও সরানোর মতো সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে? এমন ইঙ্গিতও মিলেছে রাজ্য বিজেপি সুত্রে। সেক্ষেত্রে, নুতন বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতির দৌড়ে রয়েছেন দুই শ্যাম। প্রথম যে নাম নিয়ে বিবেচনা হচ্ছে, তিনি হলেন সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি শ্যামা প্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও দুরদর্শিতার জন্য তিনি এই পদে এগিয়ে আছেন। আর দ্বিতীয় বিকল্প হিসেবে যিনি রয়েছেন, তিনি হলেন, আর এক সদ্য তৃণমূল ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগদানকারী শ্যাম মিশ্র ওরফে গৌতম মিশ্র। তবে, এটা একেবারে প্রাথমিক স্তরে আছে। দল পুরো ঘটনা যাচাই করে তবেই পাকাপাকি সিদ্ধান্ত নেবে বলেই দলীয় সুত্রে খবর। এখন শেষ পর্যন্ত কি সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য বিজেপি? সেটাই এখন দেখার। সেদিকেই নজর রইল সবার।
দেখুন 🎦 ভিডিও। 👇