শহর বাঁকুড়া

স্বামীর বিরুদ্ধে আইনি লড়াই সোহাগির,১৬ দিনের শিশু কন্য খুনের দায়ে যাবজ্জীবনের সাজা।

সোহাগি ছাতনা থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে ১৬ দিনের মেয়েকে মেরে ফেলার অভিযোগ দায়ের করেন।অসিনাথকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। নিজেমুখে খুনের কথা স্বীকারও করে সে। এরপর আদালতে মামলা চলতে থাকে৷ ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর অপরাধীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একই সাথে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বাঁকুড়া জেলা ও দায়রা বিচারক মনোজ্যোতি ভট্টাচার্য।

স্বামীর বিরুদ্ধে আইনি লড়াই সোহাগির,১৬ দিনের শিশু কন্য খুনের দায়ে যাবজ্জীবনের সাজা।
X

বাঁকুড়া২৪x৭প্রতিবেদন : পর,পর দুই কন্যা সন্তানেএ জন্ম দিয়েছিলেন সোহাগি।আর তাতেই বেজায় চটে ছিলেন স্বামী অসিনাথ সরেন। দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের জন্মের ১৬ দিনের মাথায় একরত্তির মেয়েকে কুয়োর মধ্যে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলে সে।পরে কুয়োতে মৃতদেহ ভেসে উঠলে প্রমাণ লোপাটের জন্য ধান জমিতে পুঁতে ফেলে৷ কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।স্ত্রী সোহাগি ছাতনা থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে মেয়েকে মেরে ফেলার অভিযোগ দায়ের করেন।অসিনাথকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। নিজেমুখে খুনের কথা স্বীকারও করে সে। এরপর আদালতে মামলা চলতে থাকে৷ ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

পাশাপাশি,একই সাথে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বাঁকুড়া জেলা ও দায়রা বিচারক মনোজ্যোতি ভট্টাচার্য। এমনটাই জানান, সরকারি আইনজীবী রথিন কুমার দে।প্রসঙ্গত,প্রথম মেয়ের বয়স যখন প্রায় আড়াই বছর তখন সোহাগি দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।২০২১ সালের ৯ অক্টোবর বিকেলে ১৬ দিনের সেই সন্তানকে স্বামীর কাছে রেখে বড় মেয়েকে নিয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে মাঠে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সুযোগেই মেয়েকে কুয়োয় ফেলে মেরে ফেলে স্বামী অসিনাথ। ফিরে এসে দেখেন সন্তান নেই। জিজ্ঞাসার পরেও স্বামীর কাছ থেকে কোনও উত্তর পাননি।

এরপর সোহাগি কান্নাকাটি জুড়লে সোহাগিকে ভয় দেখিয়ে দরজা বন্ধ করে ঘরে আটকে রাখে অসিনাথ। পরে ১৮ অক্টোবর স্বামীর বিরুদ্ধে ছাতনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সোহাগি। অসিনাথকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জেরায় খুনের কথা স্বীকার করে সে। এরপর ২০ অক্টোবর তার দেখানো মতো পাশের গ্রামের ধান জমি থেকে ওই কন্যাসন্তানের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।একরত্তি মেয়েকে খুনের দায়ে স্বামীকে সাজা দিতে পেরে খানিক স্বস্তি মিলেছে সোহাগির৷ সাজা মেলায় খুশী মৃত শিশু কন্যার মামা বাড়ির দাদু লক্ষণ চন্দ্র টুডুও। তিনি বলেন অনেক লড়াইয়ের পর আদালতে জয় হল।

ছাতনা থানার তুলসা গ্রামের এই খুনের ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে যেভাবে স্ত্রী সোহাগি আইনি লড়াইয়ে সামিল হয়েছিলেন তা কুর্নিশ যোগ্য৷ তার এই আইনি লড়াই সমাজে ইতিবাচক বার্তা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

👁️‍🗨️দেখুন🎦ভিডিও 👇

Next Story